অনলাইন ডেস্ক :::
বান্দরবান বনবিভাগের থানছি রেঞ্জ কর্মকর্তা কর্মস্থলে না থাকায় অবৈধ কাঠ পাচার বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা লুচেন ম্রো অভিযোগ করে বলেন, থানছি রেঞ্জ কর্মকর্তা মোকাম্মেল কবির কর্মস্থলে থাকেন না। শুধু মাসের শেষে অবৈধ কাঠ পাচারকারীদের থেকে মাসোহারা নিতে আসেন থানছিতে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, জোত পারমিট কাগজের কাঠ প্রতি গাড়ি লোডিং চেকের সময় আদায় করা হয় আড়াই হাজার টাকা করে। গত রোববার থানছি মৌজা হেডম্যানের নামে একটি জোত পারমিটের কাগজে পাঁচটি ট্রাকে করে সেগুন গাছ আনা হয় বান্দরবানে। সেগুন গাছগুলো জোত পারমিটের কাগজে সাইজ লিস্টের সঙ্গে ৫০ শতাংশও মিল নেই বলে খোদ পারমিটের বাহক কাঠ ব্যবসায়ী সৈয়দ নুর স্বীকার করেছেন। সেগুন গাছগুলো কোথায় থেকে আনা হয়েছে প্রশ্ন করা হলে সৈয়দ নুর সদুত্তর দিতে পারছেন না।
অভিযোগ উঠেছে, থানছি মৌজা হেডম্যান হ্লাফসু মারমার নামে জোতটি নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিনা তদন্তে ইস্যু করা হয়েছে যেটি সম্পূর্ণ অবৈধ কাঠ পাচারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। স্থানীয় পরিবেশ কর্মী খামলু ম্রো এর অভিযোগ, গত এক বছরে থানছি রেঞ্জের বিভিন্ন মৌজার জোত পারমিটের কাগজ ব্যবহার করে সাংগু রিজার্ভ বন থেকে অন্তত এক লাখ ঘনফুটের দশ কোটি টাকার মূল্যে গর্জন, চাপালিশ, গোদা, গুটগুটিয়া, নিষিদ্ধ ঘোষিত মাদার ট্রি চাম্পাফুল, জারুলসহ নেচারাল বনের বিভিন্ন মূল্যবান প্রজাতির কাঠ পাচার হয়ে গেছে। এই সংক্রান্ত বিভিন্ন দৈনিকে এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় ফলাও ভাবে সংবাদ প্রচার হবার পর তদন্তে নেমেছে বনবিভাগ।
জানা যায়, প্রধান বন সংরক্ষক, বিভাগীয় বনকর্মকর্তা ওয়ার্কিং প্লান, চট্টগ্রামকে আহ্বায়ক, মিজানুর রহমান, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, ফরেস্ট ইউটিলাইজেশন বিভাগ চট্টগ্রামকে সদস্য সচিব এবং মোহাম্মদ ইউছুপ, সহকারী বন সংরক্ষক, কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগকে সদস্য করে একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। অফিসে এবং মাঠপর্যায়ে সরেজমিন তদস্ত করে জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। থানছি রেঞ্জ কর্মকর্তা নিয়মিত নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করে তদন্ত কমিটির প্রতিনিধি দলকে সার্বিক সহযোগিতা করার নির্দেশনা থাকলেও তিনি সরকারি নির্দেশনা অমান্য করেই থানছি থেকে আশি কিলোমিটার দূরে বান্দরবান জেলা সদরে অবস্থান করছেন বিধি বহির্ভূতভাবে। এ ব্যাপারে থানছি রেঞ্জ কর্মকর্তা মোকাম্মেল কবিরের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে বান্দরবান বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী কামাল হোসেন জানান, সাংগু রিজার্ভ বন মূলত বনবিভাগের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। পার্বত্যাঞ্চলে অবাধে মোভমেন্ট করা এবং আইন প্রয়োগ করার মতো পরিস্থিতি নেই। তার পরও বিভিন্ন স্থানে সোর্স লাগিয়ে রাখা হয়েছে। সংবাদ পেলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নিই। তিনি আরো জানান, সরকার এবং বনবিভাগের পক্ষ থেকে অত্র এলাকায় জোত পারমিট সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পরিকল্পনা চলছে।
পাঠকের মতামত: